Amarendra sen

গল্প - অপরাজিতা

Amarendra sen
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ জীবনবাদী, বিরহ

তুমি আমার কাছে আসবে না। আমাকে ছোবে না।
অপরাজিতার কথায় তেমন অবাক হলাম না অর্ধেক রাত্রে; কারণ আমার এমন অভিজ্ঞতা পূর্বেও হয়েছে , মাঝে মাঝেই হয় কিন্ত আজকে কেন হয়েছে বোঝার চেষ্টা করছি।
আমি বললাম দেখ আমি এমন কিছুই করিনাই যে তুমি আমার সাথে এমন ব্যবহার করবে। আমিতো একটা মানুষ আমিও লোকের সাথে কথা বলবো , মিশবো তাদের সাথে সামাজিক ভাব বিনিময় করবো। এটাই তো স্বাভাবিক!
তুমিও তো তাই করছো। আমি কাকে কি বলছি কার সাথে কি কথা বলছি এবং সেটা কোন প্রসঙ্গে বলছি তুমি সেটা কি করে জানবে যদি সবটা না যেন থাকো ?
অপরাজিতা বললো- আমি কি করছি না করছি , কাকে কি বলছি না করছি সে নাকি আমার চোখ দেখেই বুঝতে পারে ।
আবার বললো – আমি সব জানি তুমি কাকে কি বলছো। আমার কাছে থেকে তুমি কোনো কিছু লুকাতে পারবে না। এটা মনে রাখবে। আমি একদম পছন্দ করিনা আমার ঘরের খবর কেউ শুনুক।

আমার মনে হলো আমি আমার বন্ধুকে বলছিলাম মনটা ভালো নেই। মানসিক ভাবে খুশি হতে পারছি না কষ্টে আছি। জানি না জীবনে কেন এতো অশান্তি আসছে।
আমিতো অফিসে গিয়ে ফোনালাপ করেছিলাম তাহলে অপরাজিতা এটা কি করে জানলো ? ওকি আমার ফোনের ডাটা পেয়ে যাচ্ছে কোনো সফটওয়্যার দিয়ে ,নাকি কোনো এজেন্সী কে লাগিয়ে দিয়েছে ? কিন্তু এতো কেন কৌতূহল আমি কাকে কি বলি ? কি করি ? আমি তো যা কিছু করছি
সেটা সবাই করে বাস্তব জীবনে। এটাই তো আমাদের নগন্য লোকের সামাজিক জীবন।
কিন্তু আমিতো কোনো এমন কিছু বলি নাই যাতে অপরাজিতাকে দোষী বা সব দায়ী করা হয়েছে ?
হয়তো মনে মনে ভেবে মনগড়া কাহিনী তৌরি করে আমার ওপরে মানসিক প্রতিশোধ নিচ্ছে।
আমি হালকা করার জন্যে বললাম দেখো এমন সন্দেহ করলে আর মনে মনে ভাবলে জীবন চলে না। ভাল মন্দ বলার , ভাবার প্রত্যেকের অধিকার আছে। এটা একটা স্বাভাবিক মানসিক প্রবণতা । তুমি যেটাকে খুব অন্যায় ভাবছো আমার দ্বারা সেটা কিন্তু মানুষের একটা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। সবাই এটা করে থাকে কিন্তু কারো নামে অপবাদ দেওয়া অন্যায়।
তুমিও এমনি করছো প্রিতিদিন রুটিন করে সকলের সাথে কথা বলছো তখন কিন্তু ভাবছোনা তুমি অন্যায় করছো , তুমি স্বাভাবিক ভাবি এটা করে যাচ্ছ। এটাই স্বাভাবিক।
কাউকেই কিছু বলা মানেই নিন্দা নয় এটা একদিক থেকে অনেক ভালো যে অন্যের মতবাদ জানা যায় আর নিজের মনের কষ্ট লাঘব হয়।
কিন্তু অপরাজিতা আরো বেশি রেগে গিয়ে বললো তোমার নিজের ভুল কোনোদিন বিশ্বাস হয় না নিজের কাছে আর তুমি যে কোনো ভুল করতে পারো , অন্যায় করতে পারো সেটাও তুমি বিশ্বাস করো না । তুমি সেই দিন আমার কাছে আসবে যেদিন তুমি তোমার ভুল বুঝবে আর সব কিছু আমাকে দেখিয়ে করবে, কোনো কথা যাকেই বলবে আমার সামনে বলবে।
আমি বললাম দেখো আমি যদি ভুল করে থাকি তুমিও সেই ভুল করছো প্রতিদিন কিন্তু তুমি নিজেই বুঝতে পারছোনা যে তুমি যা বলছো অন্যায় সেটাই তুমি প্রতিদিন অবহেলে করে যাচ্ছ। তুমি কি ভাবছো আমি যদি তোমাকে না ছুঁই তাতে আমার কিছু আসে যায়?
অপরাজিতা আরো রেগে বললো তোমার তো কিছুই আসে যায় না। তোমার সবই আছে বাইরে।
আমি বললাম আমি কিন্তু এমন কথা বা ভালোবাসি না আমাকে এমন করে কথা বলবে না। আমি অফিসের কাজ সংসারের বিভিন্ন ব্যাপার ভবিষ্যৎ, এসব ভেযে ভেবে খুব টেন্স হয়ে আছি। আমাকে এখন ঘুমোতে হবে। কাল তো আমার অফিসে আছে , অনেক কঠিন কঠিন সমস্যা নিয়ে আছি।
অপরাজিতা- হাঁ তোমার তো ঘুম হলেই হলো। মার্ কোলে গিয়ে ঘুমিয়ে নাও। নাহলে আরো হয়তো কেউ আছে তার কাছে যেতে পারো।
আমি বললাম , দেখো তুমি কিন্তু সীমা পার করে যাচ্ছ। একটু ভেবে কথা বললে অনেক কিছু
সহজ হয়ে যাবে । আর এসব আমার প্রতিদিন ভালো লাগছে না। আমায় বাঁচতে দাও।
অপরাজিতা -হাঁ আমি তো তোমাকে মেরে ফেলতে চাই !! আমি তোমার সব চাইতে বড়ো শত্রু।
আমি – দেখো আবেগ তাড়িত হয়ে কথা বললেই সব কিছু সমাধান হয়ে যায় না। সমাধানের জন্যে সমস্যা কি সেটা বুঝতে হয়।
অপরাজিতা- সমস্যা হচ্ছে তুমি লুকিয়ে চুরিয়ে কাজ করো আর আমার অসাক্ষাতে আমাকে নিচু করে সবাই কে বলো। সেটা তোমার বন্ধুকে হোক আর তোমার বাড়ির লোককেই হোক না কেন।
আমি – তুমি এটা খুব ভুল বললে। আমি অবশ্যই কথা ভাবের আদান প্রদান করি সেটা কিন্তু তোমার সামনে হলে তেমন হবে না। যেমন তুমি যদি আমার কাছে বসে তোমার আপন জনের কাছে কথা বলো তখন সেটা সেভাবেই বানিয়ে নেবে। তুমি কি আমার ভালো মন্দ তোমার আপন জনকে বলো না ? তাদের ও মতামত শোনো না ? আমি কিন্তু এটা খুব ভালো করেই জানি তুমি ও এটা করো তাহলে কেন শুধু আমাকেই দায়ী করছো ? এটা একটি স্বাভাবিক মানবিক প্রবণতা।
অপরাজিতা- দেখো তুমি যায় বলো না কেন আমি কিন্তু তোমার মতো করি না। তুমি এসব করে
আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করে দিচ্ছ। —- চলবে

পরে পড়বো
১৭
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন