আনন্দের ঔরসকামী

শুভশ্রী রায় শুভশ্রী রায়

প্রাত্যহিক অসম লড়াই আর ভালো লাগছে না
প্রতিপক্ষ সামনে আসে না
অথচ সমানে পাঠিয়ে দেয় হার,
যাকে বলে ক্লান্তির চরম!
কোনো আলো ভালো দেখাতে পারছে না।
কোনো অন্ধকারও এমন করে পাইনি
যার কিনারায় ভয় অথচ
ভেতরের দিক স্বস্তিতে সঠিক।
কখনো কখনো মনে হয়, সৎকার হয়নি শুধু
মরে গ্যাছি নিজের ভেতরে ঘোষণাবিহীন
আমি নিজেই নিজের প্রেত যেন, যেটুকু ছায়া পড়ে আমারই যে, নেই অকাট্য প্রমাণ।

এই অজন্মের বিপরীত খুঁজতে হবে।
ইচ্ছে করে ঢুকে যাই
সেই পবিত্র অন্ধকূপে, গর্ভ যার নাম।
প্রাণের তস্য প্রাণ হয়ে কোনো সন্তানকামী মায়ের
ভেতরে ঢুকে হেঁটমুন্ড ঊর্ধ্বপদ অবস্থানে
অজস্র স্বপ্ন আর কল্পনার স্রোতে থাকি নিমজ্জিত,
সেরা নিরাপত্তায় পালিত হই,
ন'মাস মায়ের জমাট ঋতু'র আবরণ সুরক্ষিত রেখে
সমস্ত চতুর্দিক থেকে
দূষণবিহীন ও মনোরম আবহাওয়া এনে দিক আমাকে।
নিরাপত্তা আর আরাম ছাড়া কিচ্ছু নেই সেখানে। যত খুশি লাথি ছোঁড় না কেন, মা তবুও পুলকিত,
অজাত শিশুর দুষ্টুমি'র একেকটি মুহূর্ত প্রিয় কাহিনী হিসেব রেখে দেবে। অত সুখ কোথাও নেই যা গর্ভের কাঙ্খিত কারাগারে বাঁধা।

ইচ্ছে করে ফের সেই অতল নিরাপত্তায় ডুবে যাই,
প্রাণের বিকল্প নেই যখন,
নিজেকে আরেক বার অন্য গর্ভের ঠিকানায় থিতু করে দেওয়াই যাক।
কোনো সুখী দম্পতির স্বচ্ছন্দ পুণ্যমিলনের পর কোনো গর্ভে ঢুকে পড়তে অফুরন্ত সাধ হয়।
কী জানি গর্ভবাসের সে বাসনা হবে কী না পূরণ!

এখানে মুহূর্তে মুহূর্তে ভিন্ন ভিন্ন মরণ মরতে মরতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি,
কোনো মৃত্যুর পরেই একরোখা দেহটি পচে না
বলে অগত্যা নিজেকে মেনে নিই।
গঠন আর ক্ষয়ের এই অসহ্য নিরানন্দ খেলা থেকে মুক্তি প্রয়োজন।
আবার আনন্দের ঔরস থেকে
আমি আরম্ভ হ'তে চাই
বিকল্প গর্ভের গভীরে পুনর্বার শুরু হো'ক
অবিকল্প জীবন।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ১০১ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন