চন্দ্রাহত কমরেড

শুভশ্রী রায় শুভশ্রী রায়

মহানগরের ওপরে উপুড় জ্যোৎস্না সহ আকাশের রূপোলি কড়াই আর তার নিচে,
কী কান্ড!
দলে কোণঠাসা আসলেই নারীবিহীন এক কমরেড
ফাগুনের মাতাল সন্ধ্যায় এলেবেলে গোলমেলে
চাঁদের সঙ্গে কথা বলে ফেলে শেষ পর্যন্ত
যদিও সচরাচর এত নরম কিছু সয় না তার
জলীয় বাষ্পে ভরা মৌসুমী বাতাসের সঙ্গেই হয়
যেটুকু তালমিল হওয়ার,
পূর্ণিমার জাদুতে কমরেডের নেই বিশ্বাস।
ঢাকুরি সেতুর কাছাকাছি একটা বারান্দা থেকে
সারা জীবন কোনো রকমে
সহ্য করে নিয়েছে সে ফোঁটা ফোঁটা মধুমাস।

এখন কোলের কাছে তার দলের গরম ইস্তেহার
তবু চাঁদের নীরব মন্ত্র ক্রমশ স্পর্শ করে তাকে,
চতুর্দিকে বাহার
আস্তে আস্তে সে মার্কসকে এড়িয়ে চাঁদকে দেখে নেয়
এবং আরো আস্তে আস্তে নিজের মনে গুনগুন শুরু করে
হয়তো বা ময়মনসিংহের কোনো লোকগীত
অনায়াসে গায়।
নিজের মধ্যে সে স্বস্তির ডুব দিতে শুরু করে
পাশ থেকে দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত রাত একটু তাকায়
গাড়ি থেকে নেমে দুয়েকটা পরী হাল্কা পায়চারি করে সম্মোহিত রাস্তায়।

কমরেডের মনে হয়, এমন রাতে একটা দুটো ভালোবাসার কবিতা মানায়
ভালো লাগছে না আর কিছু
চব্বিশ ঘন্টার হইচই কমতে কমতে মিশে গিয়েছে গভীর পূর্ণিমায়
চাঁদ দেখে কষ্ট বাড়ে কারণ পরীদের সঙ্গে তার আড়ি
এ দিকে জ্যোৎস্নায় ভেজা পেয়ারা গাছের পাশে
বারান্দায় চাঁদের জরি নিয়ে চলে মধুময় কাড়াকাড়ি
দেখে কমরেড ভাবে, পাশে থাকত যদি সেই সামান্য নারী
কবিতার মধ্যে যার ভাঙাচোরা বাসা, কোথায় এখন অল্পেই সন্তুষ্ট সেই নারী!
অন্য দিনের মতো আজ তার মনে হ'ল না, এ সবই মনতান্ত্রিক বাড়াবাড়ি।
এখন পর্যন্ত কবিতাটি পড়া হয়েছে ৮৮ বার
যদি কবিতাটা সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকে, রিপোর্ট করুন
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন